জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী, মেয়র, আইনজীবী ও রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন মহল।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মিজানুর রহমান খান। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তারা।
এক বিবৃতিতে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে সাংবাদিকতার পাশাপাশি মেধাবী মিজানুর রহমান খানের রচিত গ্রন্থগুলো মানুষকে সংবিধান ও সরকার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করেছে। মিজানুর রহমান খান তার সাবলীল, বিশ্লেষণী লেখনী ও কথনের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘মরহুম মিজানুর রহমান খান ছিলেন অসাধারণ মেধাবী, স্পষ্টবাদী ও সত্যসন্ধানী সাংবাদিক। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে তার মৃত্যুতে শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।’
ফখরুল বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে মরহুম মিজানুর রহমান খানের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। স্বাধীন সাংবাদিকতার মহান ব্রতকে সামনে রেখে তিনি নিরলস কাজ করে গেছেন, সেটি তার সতীর্থ সাংবাদিকরা চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রাখবেন বলে বিশ্বাস করি। একজন নীতিবান সাংবাদিক হিসেবে তার লেখনী ছিল সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে। সাংবাদিকতা জগতে তার অবদান নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য।
এক শোক বার্তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বিশ্লেষণধর্মী লেখনীর মাধ্যমে তিনি মননশীলতার যে ছাপ রেখেছেন, তা নিঃসন্দেহে অবিস্মরণীয়। তিনি আজীবন সাংবাদিকতার উৎকর্ষতা সৃষ্টিতে সরব থেকেছেন।’
তাপস আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষণাধর্মী প্রকাশনার যে অভাব রয়েছে, মিজানুর রহমান খান ‘মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকাণ্ড’ গ্রন্থের মাধ্যমে তা কিছুটা হলেও প্রশমিত করার সার্থক প্রয়াস রেখেছেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) তথা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সম্পৃক্ততা থেকে শুরু বৃহৎ পরাশক্তিগুলোর ভূমিকা উদঘাটনে তার এই অনন্য প্রয়াস নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস বিকৃতি রোধ করে চিন্তাশীলতার দিকে ধাবিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
মিজানুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। তারা বলেছেন, তিনি বিবেকের তাগিদে যেভাবে আইনের বিষয়ে, ন্যায়বিচারের বিষয়ে এবং মানবাধিকারের বিষয়ে তদন্তমূলক বিশ্লেষণমূলক কাজ করেছেন, বাংলাদেশে তার মতো আর কেউ করেনি। তার মৃত্যুতে সাংবাদিকদের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বিশেষ করে আইন, আদালত ও বিচার বিভাগ নিয়ে তার লেখনীর শূন্যতা অনুভব করবে আইনজীবী সমাজ।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন বলেন, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের এই চলে যাওয়াটা সাংবাদিকতায় বিশেষ করে আইন সাংবাদিকতায় বিরাট শূন্যতার তৈরি হলো। আইন বিষয়ে তার এতো স্বচ্ছ ধারণা ছিল, তা বলার অবকাশ রাখে না।